রহমান আমাদের স্কুল জীবনের ক্লাসমেট। এসএসসি পাশ করে প্রেমতুলী কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হলো। তারপর ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ তাঁকে টেনে নিয়ে গেল রনাঙ্গনে। যুদ্ধ শেষ হলো। বাংলাদেশ স্বাধীন। রহমান প্রেমতুলী কলেজে ফিরে গেল না। রহমান খায় দায় ঘুরে বেড়ায় আর মাতবরী করে।
আমি আবারো রাজশাহী কলেজে ফিরে গেছি। রহমান লেখাপড়া ছেড়ে দিলো শুনে ভালো লাগলো না। স্বভাবে রহমান খুব বেয়ারা। কখন কাকে কি বলে ফেলে এই ভয়ে সাধারনত বন্ধুবান্ধব তাঁকে এড়িয়ে চলতো। আমার সংগে তাঁর সম্পর্কটা ছিল ঠিক উল্টো। আমাকে সে সমীহ করে চলতো। এছাড়াও ভীষন ভালো বাসতো। আমার কোন কথায় সাধারণত রাগ করতো না বরং আমার কথা মেনে চলার চেষ্টা করতো।
রহমান লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছে শুনে আমি খুব কষ্ট পাচ্ছিলাম। গ্রামে এসেছি। গ্রামে আসলেই অভ্যেসমতো বিকালে বাজারে ড্যাংপাড়ার মোড়ে যায়। উদ্দেশ্য এককাপ চা, আর বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারা। রহমান আমাদের আাড্ডা এড়িয়ে চলতো। তাঁর সাথে কথা বলার সুযোগ হতো না।
ভাগ্য ভালো বাজারে যাওয়ার পথে রাস্তায় রহমানের সংগে দেখা হয়ে গেল। তাঁকে জড়িয়ে ধরে বললাম ‘‘কেমন আছিস?” রহমান কোন জবাব দিলো না। অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি জানতে চাইলাম।
‘লেখা পড়া ছেড়ে দিলি যে।” জবাবে সে বললো ‘‘প্রেমতুলী কলেজ হলো। শুধু নামেই প্রেমতুলী।” “এভাবে বলছিস কেন?” জানতে চাইলাম।
‘‘কিভাবে বলবো। একটা মেয়েও নাই। আমরা মাত্র ১২ জন ছাত্র।” রহমানের জবাব।
“তাহলে কলেজ চলে কিভাবে?” জানতে চাইলাম।
-“চলে , এভাবেই চলে। রাজশাহী কলেজে, পড়িসতো। তাই কিভাবে চলে বুঝতে পারিস না।” আবেগের সুরে রহমান অনুযোগ করলো।
-‘এখন কি করবি ? জানতে চাইলাম।
-‘সহকারী তহসিলদারের চাকুরীর জন্য আবেদন করেছি। হলে ঢুকে যাবো।' রহমান জবাব দিল।
রহমানের কাছ থেকে বিদায় নিলাম। অনেক দিন কেটে গেছে রহমানের সংগে আর দেখা নাই। আর এক বন্ধুর কাছ থেকে জানতে পারলাম, রহমান চাকুরী পেয়েছে। সে এখন সহকারী তহশিলদার। রাজশাহী আড়ানি তহশিল অফিসে পোষ্টিং। তাঁকে দেখতে আমার ইচ্ছে হলো । কি বার ছিল মনে নাই। পরপর ২টি ক্লাশ হবে না। বোটানীর গাউসজ্জামান স্যার কলেজ ছেড়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন। কোন শিক্ষককে এখনও পোষ্টিং দেয়া হয়নি। তাই ক্লাশ হবে না। ভাবলাম এটা একটা সুযোগ রহমানের সংগে দেখা করার। আড়ানি তহশিল অফিসটা কাছেই। হাঁটতে হাঁটতে তাঁর অফিসে গিয়ে উঠলাম। বারান্দায় দাড়ানো একজনকে জিজ্ঞাসা করতেই ভদ্রলোক তাঁর রূম আর খোলা দরজা দিয়ে তাঁর টেবিলটা দেখিয়ে দিলেন।
রহমান সাইজে খুব একটা বড় ছিল না। তারপর তাঁর টেবিল ঘিরে এক গাদা মানুষ। আমাকে সে দেখতে পাইনি। আমিও তাঁকে দেখতে পাচ্ছিনা। সে মাথা নীচু করে ফাইলের মধ্যে ডুবে আছে। কারো দিকে তাকাছে না।
-‘রহমান শুনছিস’। তাঁর দৃষ্টি আকর্ষন করার চেষ্ঠা করলাম।
-‘মাল ছাড়েন । হবে না।' মুখ ফাইলে রেখেই জবাব দিলেন।
-‘মাল হবে’। আমার কথাটাতো শুনবেন তো।
মুখতুলে আমাকে দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো -
-‘তুই এখানে কি করছিস।”
-‘তোকে দেখতে এসেছি।’ বললাম আমি।
টেবিলের আশেপাশের সবাইকে ধমক দিয়ে বললো -
-‘ আপনারা যান। পরে আসেন। এখন আমার সময় নাই।’’
-‘কি খাবি?’ রহমান জানতে চাইলো।
চা সিংগাড়া খেয়ে তার কাছ থেকে বিদায় নেয়ার আগে অনেক গল্প হলো।
-‘মা বাবা আমার বিয়ে দিতে চায়।’ রহমান বললো।
-‘ভালই তো। বিয়ে করে ফেল।’ বললাম আমি।
-‘কিন্তু!’ রহমান আমতা আমতা করতে লাগলো।
- কিন্তু কি?’ জানতে চাইলাম।
-‘তুইতো আলেয়ার কথা জানিস।’ রহমান বললো।
-‘জানি। তো কি হয়েছে? আলেয়াকেই বিয়ে করে ফেল।’ আমি উপদেশ দিলাম।
-‘ আমার তো কোন আপত্তি নাই। আলেয়ার মা বাবা রাজি না।’ রহমান জানালো।
-‘কেন?’ জানতে চাইলাম।
-‘ ভালো ছাত্রী। ভালো কলেজে লেখা পড়া করে। আমার সাথে বিয়ে দিবে না।’’ আমার বন্ধুর আক্ষেপ।
কি আর করবি। খালা খালু, যখন চায় একটা ভালো মেয়ে দেখে বিয়ে করে নে। কি আর করবি।
রহমান বিয়ে করার জন্য বউ দেখে বেড়াচ্ছে। গ্রামে একটা মেয়েকে কয়েকদিন আগে দেখে এসেছে।
‘‘ব্যাটা বউ কেমন।’’
‘‘বউ দেখলাম কোথায় ? একটা মেয়েকে দেখেছি। বিয়ে করলে না বউ হবে।’’ বন্ধুর জিজ্ঞাসার জবাবে রহমান খুব্দ প্রতিক্রিয়া জানালো।
বন্ধু রহমানের জবাবে অবাক হয়ে বললো-
‘কেন, মেয়ে তোর পছন্দ হয়নি। শুনেছি মেয়েটি নাকি এলাকার সেরা সুন্দরী।’’
‘সুন্দরী না ছাই। এমন আলতা পাউডারে সবাইকে ভালো লাগে।’ বন্ধুটি রহমানের প্রতিক্রিয়া দেখে বন্ধুটি কথা বাড়ালো না। কেটে পড়লো। আমরা কজন পাশে দাড়িয়ে রহমান ও তার বন্ধুর কথা শুনছিলাম। আর হাসছিলাম। রহমান আমাদের বন্ধু। আমাদের অনেকের মতো সেও তখনও বিয়ে করেনি। রহমানের বাবা মায়ের ধারণা তারা আর বেশী দিন বাঁচবেন না। তাই রহমানকে বিয়ে দিয়ে বউ এর সুখ দেখে যেতে চান।
রহমান খুজে বেড়াচ্ছে আলেয়াকে। মেয়ে যত সুন্দর হোক সে তো আলেয়া নয়। রহমান চোখ দিয়ে দেখে না। দেখে হৃদয় দিয়ে। হৃদয়ে আলেয়া। চোখ দিয়ে দেখলে মস্তিস্ক সদ্য দেখে আসা মেয়েটার সংগে আলেয়াকে তুলনা করতে পারতো। রহমান তা করতে পারে না।
রহমানের কাছ থেকে বিদায় নিলাম। হাটছি আর ভাবছি। দেখার মধ্যে এত তফাৎ। পাশ দিয়ে একটার পর একটা রিক্সা যাচ্ছে। ছেলে, মেয়ে, বুড়াবুড়ি যাচ্ছে আসছে। আমরা চোখ দিয়ে দেখছি। কোন চেহারা তো মনে থাকে না।
আমার পাশের বাড়ীর আইয়ুব বিশ্বাস। আমার মাথা থেকে এ ছবি কোন বের করে ফেলতে পারিনা। তিনি মারা গেছেন। তবুও মাথায় তিনি রয়ে গেলেন। আজও আমি তাঁকে দেখি মস্তিস্ক দিয়ে। চোখ দিয়ে দেখার অনেক দুরে তিনি। মাথা নামক হার্ডডিস্কটাতে সার্চ দিলেই আজও তাঁর ছবিটা চোখের পর্দায় ভেসে উঠে। মস্তিস্কের চোখ দিয়ে তাঁকে দেখতে পায়।
বাবা মারা গেছেন সেই ১৯৬২ সালে। মাথা নামক হার্ডডিস্ক এ কোন সার্চ দিতে হয় না। বুকের গভীর হতে একটা দীর্ঘশ্বাসসহ আজও ভেসে আসে তাঁর মায়া ভরা মুখ। যেন জিজ্ঞাসা করছে ‘‘ কেমন আছিস বাবা ?" আমি কি জবাব দিবো জানি না। চোখ দুটি ছল ছল করে উঠে। কোন প্রতিছবি নাই। কোন ঘটনা নাই, তবু তিনি আছেন আমার মাঝে। সারাক্ষণ আমার হৃদয়ে। হৃদয়ের চোখে বাবার প্রতিকৃতি আজও ভেসে বেড়ায়।
অফিসে আমার ব্যাক্তিগত কর্মকর্তার নাম আবু তালেব। অফিসে গিয়ে, অফিসে উঁকি দিয়ে চোখ দিয়ে দেখি সে এসেছে কি না। না দেখতে পেলেই তার কাজকর্মকে বিচার বিশ্লেষণ করি। অনেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অফিসের কাগজপত্র এদিক ওদিক করার অভিযোগ পেয়েছি। তালেব-এর নামে এমন কোন অভিযোগ আজও পাইনি। তাই অন্যচোখে তাঁকে দেখি। কখন যেন সে একটু জায়গা করে নিয়েছে হৃদয় মাঝে। অনেক দিন চোখের সামনে না পেয়ে বকাঝকা করার ইচ্ছা থাকলেও মস্তিস্ক আমাকে করতে দেয়নি। এখন তালেবকে মস্তিস্ক দিয়ে দেখি।
নীল আর্মস্ট্রং চাঁদে গেলেন। সারা পৃথিবীতে হইচই পড়ে গেল। বাংলাদেশে আমার গন্ডগ্রামটাও বাদ পড়লো না। আমাদের পাড়ার একজন লোক লেখাপড়া তেমন জানেন না। আমার কাছে এসে জানতে চাইলেন ‘লোকজন হইচই করছে, চাঁদে নাকি মানুষ গেছে?’ বলতো বাবা এই পাতলা থালার উপর উল্টো হয়ে সে দাড়াবে কি ভাবে? পড়ে যাবে না।’’ আমি বললাম 'না'।
ভদ্রলোক ভীষণ রেগে গেলেন আমার জবাব শুনে। তাঁকে বোঝাতে চাইলাম চাঁদ বিশাল ও গোল। তারও মধ্যাকর্ষণ শক্তি আছে। তিনি কোন কিছুই শুনলেন না। রাগ করে গালাগালি করে চলে গেলেন। তাঁর চোখে চাঁদটা একটা থালা ছাড়া আর কিছুই না। তিনি সব কিছু চোখ দিয়ে দেখেন। তার দেখায় মস্তিস্কের উপস্থিতি নাই।
সুকান্ত তাঁর একটা লাইন দিয়ে আমার জীবনটাকে উলোট পালট করে গেলেন, ‘পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি'। চাঁদকে তিনি পেট দিয়ে দেখছেন। নজরুল চাঁদকে দেখেছেন অন্ধকারে পথের দিশা হিসাবে। তাঁর তিনি চাঁদকে দেখেছেন মস্তিস্ক দিয়ে। রবিন্দ্রনাথের চন্দ্র দর্শন প্রেমের গভীরে। অর্থ সামাজিক অবস্থার কারণে তাদের দেখার রকম ফের ভিন্ন।
এসব ভাবনায় যখন আছি। হঠাৎ মোবাইলটা বেজে উঠলো। আমার স্কুলের সহপাঠী মুকুলের টেলিফোন। কোন ভনিতা ছাড়াই সে জানালো রহমানের ক্যান্সার। আমাদের কিছু করা দরকার। আমার রাজশাহীতে একটা কাজ ছিল। কয়েক দিন পর যেতে হবে। আমি জানালাম, কয়েক দিনের মধ্যে আমি রাজশাহী আসছি। আসার পর একটা কিছু করবো। খোঁজ নিয়ে জানলাম রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আছে। হাসপাতাল গিয়ে জানলাম সে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে আছে। সেখানে যাওয়া নিষেধ। একজন ডাক্তার বাহির হয়ে আসলেন। ডাক্তার সাহেবকে জিজ্ঞাসা করলাম - ও কেমন আছে ?
-‘কার খবর জানতে চাইছেন? আইসিইউতে তো অনেক রোগী আছে।’’ ডাক্তার জানতে চাইলেন।
‘আবদুর রহমান তহশিলদার, তাঁর কথা বলছি।’ ডাক্তারকে বললাম।
-‘ কেমন দেখলেন ? জানতে চাইলাম।
-‘ ও তেমন কিছু নয়। কয়েক দিন হাসপাতালয়ে থাকলে সব ঠিক হয়ে যাবে।’ ডাক্তার সাহেব জবাব দিলেন। ডাক্তার সাহেব প্রতিদিন অনেক রোগী দেখেন। আমার মত অনেক আত্মীয় স্বজনের প্রশ্নের জবাব দিতে হয় তাদের। এভাবেই তারা সবকিছু দেখেন। জবাব দেন।
রহমানের বিছানার পাশে বসে ছিল একজন মাঝবয়োসী মহিলা। জীর্নগাত্র গাঢ় শ্যামলাবরণ। পরে জানলাম তিনিই রহমানের বউ। অবাক হলাম রহমান এলাকার সবচেয়ে সন্দুরী মহিলাকে দেখে বিয়ে করতে রাজি হয়নি। কিন্তু এই ভদ্রমহিলার মাঝে কি দেখেছিলেন? ভাবতে ভাবতে একটা জবাব পেলাম। জানি না কতটুকু সত্য। হয়তো তাঁর মাঝে রহমান তার আলেয়াকে খুঁজে পেয়েছিলো।
ডাক্তারদের সংগে কথা বলে ভাবীকে কিছু টাকা আর শান্তনা দিয়ে বিদায় নিলাম। পাঁচ দিন পর জানতে পারলাম সব কিছু ঠিক হয়ে গেছে। রহমান বাড়ী ফিরেছেন। লাস হয়ে।
দেখার এমন রকম ফের নিয়ে আমি যখন লিখছি তখন একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল। আমার পাশের বাড়ীর এক ছোট ভাই, তাঁর মাকে বলছে- ‘‘মা’ আমি বিয়ে করবো’’। 'কাকে?’ মা জানতে চাইলো।
-‘ আমেনাকে’ ? জবাবে ছোট ভাই বললো।
-‘আর কোন মেয়ে পেলিনা। ঐ বুচিকে তোর পছন্দ হলো?’ মা আক্ষেপ এর সুরে বললেন।
-‘ কি বললি আমেনা বুচি ! তার চেয়ে আর কোন সুন্দরী মহিলা আছে।’ ছোট ভাই প্রতিবাদ জানালো।
আমি জানি কেন এই অবস্থা। মা আমেনাকে দেখছেন চোখ আর মস্তিস্ক দিয়ে। এ গুলো দিয়ে আমেনাকে বুচিই দেখা যায়। ছোট ভাই আমেনাকে দেখে হৃদয় দিয়ে। চোখ সেখানে অন্ধ। মস্তিস্ক সেখানে অনুপস্থিত। আমেনা শ্রেষ্ঠ সুন্দরীতো হবেই তাঁর কাছে।
আমেনার সংগে পাড়ার ছোট ভাইটির বিয়ে হয়েছে। আমেনা বেশ ভালো মেয়ে। সে মায়ের নিত্য দিনের সাথী। আমেনা মায়ের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। মা আমেনার ব্যাপারে এখন অন্ধ। পাড়ার ছোট ভাই এখন চোখ আর মাথা দিয়ে আমেনাকে দেখতে শুরু করেছে। ১৫ বছর পরের ঘটনা। আমি একটা রোজার ঈদে বাড়ি গেছি। পাশের বাড়ি হতে চিৎকার শোনা যাচ্ছে।,
-‘ মা, ঠিকই বলেছিলো। তুই বুচি!’ ছোট ভাইটি চিৎকার করে বলছে।
-‘ কি বললি আমেনার মতো ভালো মেয়ে কোথায় পাবি।’ মা জবাব দিচ্ছেন। আজ মা আমেনাকে দেখছেন হৃদয়ের অন্ধত্ব- দিয়ে।
এ সব নিয়ে ভাবছিলাম। এমন এক সময় হঠাৎ এলিফ্যান্ট রোডে দেখা হয়ে গেল রাজশাহী কলেজের এক বন্ধুর সঙ্গে। নাম ডাঃ আলম। তিনি চোখের ডাক্তার। বয়স চল্লিশ পার হয়েছে। চল্লিশের চালসা চোখে ধরেছে। একদিন আলমের কাছে গেলাম।
চিকিৎসা, চা-পানির মাঝে জিজ্ঞাসা, করলাম ,
-‘চল্লিশ পার হলেই চালসা পড়বে কেন ? এটা বন্ধ করা যায় না?’ জানতে চাইলাম।
-‘যায়। তবে এটা করা ঠিক হবে না। ’ ডা: আলম জবাবে বললো।
-বললাম, ‘কেন ?
‘তাহলে বুড়োগুলো তার সাথীকে চোখ আর মস্তিস্ক দিয়ে দেখবে।’
-‘ বললাম - হৃদয় কে কাজে লাগাবে না?’ জবাবে সে জানালো - ‘না’।
বুঝলাম এটা হলে সমাজে অশানি- দেখা দিবে। তার থেকে চালসা দিয়ে দেখাই ভালো।
বুঝলাম দেখার রকম ফের কেন? সুকান্তের পেট দিয়ে চাঁদ দেখা, নজরুলের চোখ ও মস্তিস্ক দিয়ে দেখা, আর রবিন্দ্রনাথের হৃদয়ের অন্ধত্ব দিয়ে দেখার কারণ। দেখার রকমফের থাকবেই।