রুপপুর বাংলাদেশের পদ্মা পাড়ের একটা গ্রাম।৫০ বছর থেকে মানুষ শুনছে এখানে পরমাণু চুলা থেকে বিদ্যুৎ হবে। ৪০ বছর আগে এ চুলার বিজ্ঞানীদের ঘর বাড়ী তৈরী শুরু হলো। সবাই খুশি এই বুঝি চুলা জ্বললো, বাড়ী ঘরে সুইচ টিপ দিলেই সব ফকফকা দেখা যাবে। চুলাই তৈরী হলো না। বাড়ী ঘর তৈরী মাঝ পথে থেমে গেল। এখন পরিত্যক্ত। ৫০ বছর পর আবার শুনা যাচ্ছে নতুন করে পরমাণু চুলার কথা। রাশিয়ার সাদা চামড়ার একদল মানুষ কাজে নেমে পড়েছে। মাটি উঁচু হচ্ছে, ছোট খাটো দালান কোঠা নতুন করে তৈরী হচ্ছে।
ছোট বেলায় দেখতাম মা চাচিরা কাদামাটি দিয়ে মাটির চুলা তৈরী করতেন। সাইন্স ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা বললেন, এ চুলা ভাল নয়, পরিবেশ দূষণ হয়। অনেক কাঠ অপচয় হয়। তারা আনলেন উন্নত মানের মাটির চুলা। মায়ের মাটির চুলা এখনও আছে। অনেক বাড়িতে সাইন্স ল্যাবরেটরির উন্নত চুলাও বসেছে।
গ্রাম ছেড়ে শহরে আসলাম। ঘরের মধ্যেই রান্না, থাকা খাওয়া। মাটির চুলা এখানে চলে না, তাই কেরোসিনের চুলা, ইলেকট্রিকের চুলা, গ্যাসের চুলা। এত দিন জানতাম বিদ্যুৎ দিয়ে চুলা জ্বলে, এখন শুনছি চুলা থেকে বিদ্যুৎ হবে। আবার এ চুলা কয়লা, কেরোসিনের চুলা নয়। এ চুলা পরমাণু চুলা। এখানে জ্বলবে পরমাণু, তৈরী হবে তাপ। তাপে পানি বাষ্প করে তা দিয়ে টারবাইন ঘুরিয়ে জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরী হবে। কাঠ, কয়লা পুড়ে, তৈরী হয় কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস, তাপ –আর পড়ে থাকে ছাই। ছাই আর কিছু নয়; না পোড়া কার্বন। চুলা পরিষ্কার করে ছাই গুলো একটা গর্তে জমা করে রাখা হতো। চৈত্র মাসে এই ছাইগুলো মাঠে নিয়ে গিয়ে জমিতে ছিটানো হতো। ছাই জমিতে দিলে ধান গম ভালো হয়। শহরের লোকজনের মাছ কুটার জন্য ছাই দরকার হলেও ঘরে চুলোর ছাই দরকার নাই। তাই এদের জন্য তেল,গ্যাসের চুলাই ভালো।