ক্ষুদ্রঋণ-দারিদ্র বিমোচন

Category: Economy Written by Md. Rafiqul Islam Hits: 30207

‘বাঙ্গালী লোন করে ঘি খায়।’ শতাব্দী পুরাতন একটা প্রবাদ। ভোগবাদী সমাজের বড় উদাহরণ এই প্রবাদ। ঘি খেতে বাঙ্গালীকে কেউ বারণ করেনি, তাই বলে লোন করে ঘি খেতে হবে কেন? আমরা চরম ভোগবাদী বলেএমন একটা ভোগবাদী সমাজে যদি বলা হয়,

 

- “ঋণ পাওয়া গরীব মানুষের অধিকার।”

তা হলে মানুষ আরও ভোগবাদী হয়ে যেতে পারে। এমন ক্ষেত্রে ঋণ বিনিয়োগের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করবে না। মানুষকে আরও দরিদ্র করে ছাড়বে। বিষয়টি নিয়ে আরও পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই ব্যাপক আকারে ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম চালু হলো। বস্তুত আগেও জামানত ছাড়া ক্ষুদ্র ঋণ চালু ছিল। গ্রামের মহাজন চাষ আবাদ, মেয়ের বিয়ে, পরিবারের লোক জনের চিকিৎসার জন্য ঋণ দিতেন। মহাজন এর জায়গায় আসলো ক্ষুদ্র ঋণ দাতা সংস্থা। গরীব মানুষ জামানত ছাড়া ঋণ নিয়ে ছোট ছোট ব্যবসায় কৃষিতে বিনিয়োগ করছেবিনিয়োগের লাভ থেকে সপ্তাহ শেষে ঋণের একটা অংশ সুদসহ কিস্তিতে জমা করবে। একদিন, ঋণ শোধ হবে, ঋণ নেওয়া টাকা ঋণ গ্রহিতার পুঁজি হিসাবে তার কাছে রয়ে যাবে। তা দিয়ে সে ব্যবসা করে তার উন্নয়ন ঘটাবে। প্রাথমিক পর্যায়ে উন্নয়নের এ মডেল ব্যাপক সাড়া পেল। জামানত বিহীন ঋণ, ভোগবাদী সমাজের মানুষ ঋণের কিস্তি ফেরৎ দিবে যদি ঋণগ্রহীতা বিনিয়োগ করে। খেয়ে ফেললে আম ছালা দুটোই যাবে। অভিজ্ঞতা থেকে ঋণের বিনিয়োগ নিশ্চিত করার জন্য সুপারভিশনের ব্যবস্থা করা হলোলক্ষ লক্ষ ঋণ গ্রহিতা তাদের আলাদা ভাবে দেখভাল করা মুখের কথা নয় - অসম্ভবও। সব ঋণ গ্রহীতাকে চেনাও সম্ভব নয়। ছোট ছোট দল গঠন করা হলো। দলের সুপারিশে ঋণ দেওয়া হবে। কোন ব্যক্তি ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে দল তাকে চাপ দিয়ে ঋণ আদায় করবে। ঋণের জন্য জামানত লাগে, এ জায়গায় দলের চাপ যোগ করা হলো। কালক্রমে দেখা গেলো, এ চাপও তেমন কাজ করছে না, ভোগবাদী মানুষ ঋণ নিয়ে খেয়ে ফেলে। ঋণ ফেরৎ দেওয়ার জন্য গালাগালি দিলেও গায়ে মাখে না। কলার ধরলে ছাড়িয়ে নিয়ে আস্তে করে গা ঢাকা দিচ্ছে।

বাংলাদেশ পুরুষ শাসিত সমাজ। খাবার পাতে মাছের মুড়োটা ছেলেদের প্রাপ্য। মা, ছেলেদের পেট পুরে খাওয়ানোর পর বাকি কিছু থাকলে খাবেন। মা ছাড়াও মেয়েদের পাওনা এঁটে ঝুটো। সামাজিক অনুশাসনেই ছেলেরা মেয়েদের চেয়ে অনেক বেশী ভোগবাদী। গ্রামীন ব্যাংক শুরুর দিকে স্ত্রী পুরুষ মেয়ে সবাইকে ঋণ দেওয়া শুরু করলেও ভোগবাদী ছেলেদের হতে দূরে সরে গেলো। ছেলেদের আর ঋণ নয়। মেয়েদের নিয়ে দল গঠন করতে হবে। ক্ষুদ্র ঋণ দাতা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রাথমিক অবস্থান থেকে সরে আসলোএখন ঋণ পাওয়া গরীবের অধিকার নয়। শুধু মাত্র মেয়েদের অধিকার।

মেয়েদের গালাগালি দিলে তারা গায়ে মেখে নেয়। সহজে ঝেড়ে ফেলতে পারে না। হজম হয় না। প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। ব্লাউজ ধরা তো দুরের কথা, পরপুরুষ হাত ধরলেও মান-সম্মান হারাতে হবে। দলগত চাপ মেয়েদের জন্য ভালো অস্ত্র। এছাড়াও গরীব ছেলেদের কিছু না থাকলেও, মেয়েদের কিছু থাকে। মেয়ের বিয়ের সময় বাবা ঋণ করে হলেও নাকের নোলক, কানের দুল, ছাগল-মুরগী দিয়ে মেয়েকে বিদেয় করেন। দলের, সুপারভাইজারদের চাপে মহিলা ঋণগ্রহীতা নাকের নোলক, কানের দুল, ছাগল-মুরগী বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করে দেন।

বাংলাদেশের মেয়েরা জন্মের পর থেকেই আপদের মধ্যে বসবাস। তারা আপদটা ছেলেদের থেকে ভালো টের পায়। পেটের ক্ষুধার আপদ তাদের চেয়ে কেউ বেশী টের পায়না। খাবার নাই। ছেলেরা অন্যদের বাড়ীতে গায়ে গতরে খেটে দিয়ে এক বেলা উদরপূর্তি করতে পারে। তা না হলে অন্যের বাগানের আম, জাম, পেয়ারাটা চুরি করলেই পেটটাকে সান্ত্বনা দেয়া যায়। ওটা না পারলে, রাস্তার গাছের বড়ই, পুকুরের শালুক-ভ্যাট দিয়েও কাজটা চালানো যায়। মেয়েগুলো কি করবে? তাই তাঁরা অভাব অনটনের সময়ও আপদের কথা মনে রাখে। মুঠি জমিয়ে লুকিয়ে রাখে। তা না হলে আপদে স্বামী-ছেলের মুখে কি তুলে দিবেন। স্বামী বলবে, ‘ভাত দে’। ভাত নাই তারা শুনতে চায় না। কপালে জোটে পিটুনি। তাই তাদের মধ্যে গড়ে উঠে সঞ্চয় প্রবণতা।

সামাজিক মান-সম্মান যখন শিকেয় উঠে তখন মুঠির লুকিয়ে রাখা ধন দিয়ে তা রক্ষা করে। তাই ক্ষুদ্র ঋণ ছেলেদের পাঠ চুকিয়ে এখন শুধু মেয়েদের নিয়ে আছে।

মহিলারা ঋণ পাচ্ছে। তাঁরা ঋণ নিয়ে কি করবে। বাংলাদেশে মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ কোথায়? ঋণের টাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসা করবে? আমাদের সমাজ ব্যবস্থা কি তা করতে দিবে? তাই তাদের আত্মকর্মসংস্থান ছাগল-মুরগী পালনের মধ্যে আটকে আছে।

বাড়ীতে জামাই এসেছে বাবা বললেন;

-‘ বৌমা তোমার একটা মুরগী ধরো। মেহমানদারীতো করতে হবে। তা না হলে যে ইজ্জত থাকে না’

ভোগবাদী সমাজে মহিলাদের ঋণে কেনা মুরগীও রেহাই পায়না। মেহমানদারী আর ইজ্জত রক্ষায় চলে যায়। ঋণের কিস্তি শোধ দিবে কি করে? বাপের বাড়ী থেকে আনা নাকের নোলক, কানের দুল, কোমড়ের বিছা- শ্যাকরার দোকানে যায়। ঋণ পরিশোধ হয়।

মহিলারা ঋণ নিয়ে তুলে দেন স্বামী, ছেলের হাতে। স্বামী, ছেলে হাটে ব্যবসা করে কিস্তি পরিশোধ করবে। গোদাগাড়ীর আকরামের বউ ঋণ দিয়ে তুলে দিয়েছে স্বামীর হাতে। সে নাটোর জেলার হাটবাজার থেকে আনাজ এনে গোদাগাড়ীতে বিক্রি করে। প্রথম দিকে ভালোই চলছিল। একদিন আকরাম খালি হাতে বাড়ী ফিরলো। বউ জানতে চাইলে আকরাম জানালো,

- “ ছিনতাইকারী সব কিছু কেড়ে নিয়েছে। জানটা বেচেছে এই বড়।”

আকরাম বাড়ী ফিরেছে, জানে মরেনি, ভাল খবর। তাতেও বউয়ের মাথায় হাত। লোনের কি হবে? ক’দিন পর কিস্তি বাকি পড়লো। দলের চাপ, সুপারভাইজারের ভয় ভীতিবউ আকরাম কে বললো,

- “ লোনের কিছু একটা করো।”

আকরামের কড়া জবাব,

- “ লোন নিয়েছো তুমি। তুমি শোধ করবা। বাপের বাড়ী থেকে এনে শোধ করো।”

ঝগড়া ঝাটি অশান্তির এক পর্যায়ে আকরাম তিন তালাক দিয়ে বউকে বাপের বাড়ী বিদায় করে দিলো।

এদেশে স্বামী দেবতা। বউরা এই দেবতার অর্ঘ। বউয়ের টাকা কোন হার। ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম হতে ভোগবাদ বিদায় করার জন্য পুরুষ বিবর্জিত করেছে। পুরুষ বিবর্জিত করা সম্ভব হয়েছে কি? ঋণ পুরুষ মানুষের হাতেই আসে, বউ এর মাধ্যমে। আগে ঋণী ছিল পুরুষ এখন মহিলা। ঋণগ্রস্ত মহিলা সব কিছু হারিয়ে বাপ ভাই এর ঘাড়ে গিয়ে চাপে। বাপ ভাই এর আশ্রিতা।

মানুষ, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র কোন কিছুই মহিলা বা পুরুষকে বাদ দিয়ে নয়। আলাদাভাবে রাষ্ট্রের কোন একটি প্রতিষ্ঠান মানুষকে বাদ দিয়ে মহিলা বা পুরুষদের আলাদাভাবে উন্নয়ন বা দারিদ্র মুক্ত করতে চাইলে তা কতটুকু ফলোপ্রসু হবে, ভেবে দেখা দরকার ছিল। মহিলা পুরুষকে পৃথক করে সমাজের ভারসাম্য রক্ষা করা কঠিন। অসম্ভবও বটে।

ঋণ দরকার উদ্যোক্তার, সে ক্ষুদ্র হোক বা বৃহৎউদ্যোক্তা কর্মসংস্তান সৃষ্টি করবে, নিজের, অপরের জন্য। সব মানুষ উদ্যোক্তা নন। সবাইকে ঋণ দিলেই কর্মসংস্তান সৃষ্টি হবে না। দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী ৪ কোটি এ দেশের মানুষ রোগে শোকে ভোগে। এরা ঋণ নিয়ে ঘি না খেলেও অসুখে ডাক্তার দেখাবে, ঔষধ খাবে। আত্মকর্মসংস্তান শিকেয় উঠলেও এটা থামানো যাবে না। পুজি হারানো এ মানুষ গুলোকে দলগত চাপ প্রয়োগ করে ঋণ আদায় করা যাবে না। অনাদী ঋণের বোঝা বহন করতে হলে ক্ষুদ্র ঋণের সুদের হার কোন দিন কমবে না। সুদের এই হার পরিশোধ করে দারিদ্র বিমোচন চিন্তা কত দূর ফলপ্রসূ হবে এটা গবেষণার বিষয়।

৮০ এর দশকে গার্মেন্টস কারখানা চালু হলে ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতা পরিবারগুলোর মেয়েরা শহরে এসে কারখানায় চাকরি নিচ্ছে। গার্মেন্টস কারখানায় কর্মসংস্থানকে তারা বেশী গুরুত্ব দিচ্ছে। ঋণ নিয়ে পুজিশ্রম বিনিয়োগের অনিশ্চয়তা থেকে তারা মুক্তি পেয়েছে।

কথা ছিল ক্ষুদ্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জামানত ছাড়া ঋণ দিবে। কিন্তু ঋণকে দলগঠন, বাধ্যতামূলক সঞ্চয় এ সবের বেড়াজালে আপদ করে ফেলেছেতার উপর উচ্চ সুদের হার। কিছু সংগঠন ঋণ দেওয়ার আগেই সঞ্চয় নিয়ে উধাও। ঋণের সুদের বোঝায় ঋণগ্রহীতা সর্বশান্ত। ভিটাবাড়ী হারিয়ে তারা পথে বসেছেন। দেখে শুনে সরকার মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটোরি অথরিটি গঠন করে সংগঠন গুলোর রশি টেনে ধরেছে। ক্ষুদ্র ঋণের রমরমা অবস্থা আজ আর তেমন চোখে পড়ে না।

ক্ষুদ্র ঋণ বিতরনকারী সংগঠনগুলোও তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। তারা ক্ষুদ্র ঋণ বাদ দিয়ে সামাজিক ব্যবসায় ঝুকে পরেছে। গরীব মানুষের টাকায় প্রতিষ্ঠানগুলোর রমরমা অবস্থা। গরীব মানুষ গরীবই রয়ে গেছে।

৭০-৮০ দশকে ক্ষুদ্রঋণ ছিল দারিদ্র বিমোচনের একমাত্র পথ। এনজিও সরকারী প্রতিষ্ঠান সবাই ঝাপিয়ে পড়ে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমে। তবুও আজও দেশের এক-চতুর্থাংশ লোক দারিদ্রসীমার নিচে। সংস্থাগুলোর তথ্যমতে দেশের ৫০% লোক ক্ষুদ্রঋণের আওতাভুক্ত। তাহলে আজও এ অবস্থা কেন? ক্ষুদ্র ঋণ তার লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে?

এখন নতুন করে কেউ কেউ বলছেন,

-“সঞ্চয়ই একমাত্র মুক্তির পথ”

-“ সামাজিক ব্যবসা-ই পারে অর্থনৈতিক মুক্তির পথ দেখাতে”

যার দু’বেলা পেটের ভাত জোটে না, পুষ্টির কথা নাই বা ভাবলাম। সে সঞ্চয় করবে কিভাবে? যে সমাজে ব্যবসায়ী বেশী লাভের আশায় খাবারে, ঔষধে ভেজাল দিতে দ্বিধা করেনা, তাদের সামাজিক ব্যবসা অর্থনৈতিক মুক্তির পথ দেখাবে একথা বিশ্বাস করি কিভাবে?

এ দেশের শিক্ষিত-অশিক্ষিত সবাই কাজ চায়। উদ্যোক্তা হওয়ার ‘মেন্টাল সেট আপ’ আমাদের সৃষ্টি হয়নি। অতিসাহসী কিছু উদ্যোক্তা এগিয়ে আসলেও তাদের জন্য অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। পাকিস্তান আমলে বিদেশ থেকে বাওয়াণী, ইস্পাহানীদের উদ্যোক্তা হিসেবে এনে সরকারী কোষাগার থেকে মূলধন যোগান দিয়ে শিল্প সৃষ্টি করা হয়েছিল। আমরা ছিলাম কেরানি, শ্রমিক। আজও আমরা মানসিক ভাবে কেরানি শ্রমিকই রয়ে গেছি।

কেরানি শ্রমিক হওয়ার জন্য দালালের হাতে লাখ লাখ টাকা তুলে দিয়ে ডিঙিতে উঠে বসছি সাগর পাড়ি দেওয়ার জন্য। মৃত্যু ভয়, বিদেশের মাটিতে জেল, জুলুম নির্যাতন কোন কিছু ঠেকাতে পারছে না। থাইল্যান্ড, মালায়শিয়ার জংগলে মৃত্যুর ঝুকি নিতে তাদের আপত্তি নাই। তারা আত্মকর্মসংস্থান খোজে না, তারা একটা চাকরী চায়। ক্ষুদ্রঋণ দাতা প্রতিষ্ঠান পত্রিকায় ফলাও করে তাদের সাফল্যের কথা তুলে ধরে। তারা ব্যর্থতা গুলো দেখাতে চায় না।

ক্ষুদ্র ঋণদাতারা আছেন ঋণ দেওয়া আর আদায় করা নিয়ে। ঋণগ্রহীতা ঋণ নিয়ে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারলেন কি না দেখার সময় বা সামর্থ্য কোথায়?

এ দেশে বড় বড় শিল্প উদ্যোক্তা বিনিয়োগের পরিবেশ নিয়ে দিনরাত হইচই করছেন। সেখানে একজন অশিক্ষিত সহায় সম্বলহীন গরীব বিনিয়োগ করে আত্মকর্মসংস্থান করবেন কি ভাবে, তাকে পথ দেখাবেন কে? আমাদের দেশে বড় সমস্যা, আমরা সবাই পরামর্শক। রোগী পেলেই সবাই ডাক্তার সেজে যায়। বলতে থাকি এটা করেন, ওটা করেন, ওটা খান। এ ছাড়াও রাস্তার মোড়ে মোড়ে সর্বরোগ বিশেষজ্ঞ ও ধনন্তরি ঔষধের কোন অভাব নাই। ক্ষুদ্রঋণ দাতা প্রতিষ্ঠানের একজন স্থানী প্রতিনিধি তাঁর দলের কর্মীদের নিয়ে ব্যস্ত। তাঁকে জিজ্ঞাসা,

- “এরা ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে কি করবে?”

আমার অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে মহাজ্ঞানীর মত জবাব দিলেন,

‘কেন, হাস-মুরগী, গরু ছাগল ভেড়া পালন করবে। ছোট খাটো ব্যবসা করবে।’

তাঁর কথাগুলো রাস্তার সর্বরোগের ঔষধ বিক্রেতার মত কানে বাজলো। ওখানেও সরল বিশ্বাসে গরীব মানুষ ঔষধ কিনছে। এখানে গ্রামের গরীব মানুষগুলো সরল বিশ্বাসে ঋণ নিচ্ছে। তারা জানে না।

- “হাস-মুরগী কিনে তা দিয়ে কিস্তির টাকা শোধ হবে কি না?”

- “হাস মুরগী গরু ছাগল মারা গেলে কি হবে।”

- “ব্যবসায় লস হলে টাকা খোয়া গেলে কি করবে।”

হাজারো অনিশ্চয়তার বেড়াজালে বাধা পড়ে আছেন এ গরীব মানুষগুলো। ঋণের সামান্য কটা টাকা এদের দারিদ্র বিমোচন করে দিতে পারবে? জানি না।

মোঃ রফিকুল ইসলাম, পিএইচডি

সাবেক সচিব