দাঁড় কাক নামক পাখিটির সঙ্গে জন্ম সূত্রেই আমার পরিচয়। বয়স আর জ্ঞান বাড়ার সাথে সাথে পাখিটির সংগে ঘনিষ্ঠতা বেড়ে যায়। অন্য আর দশটা পাখির সঙ্গে দাঁড় কাককে আমার আলাদা কিছু মনে হয় না। অন্য দশটা পাখিকুলের মত কাক ছিল আমার কাছে একটা অতি সাধারণ একটি পাখি। এই দাঁড় কাক নিয়ে ভাববো, লিখবো এটা কোনদিন চিন্তাও করিনি।
১৯৬২ সাল। বাবা মারা গেলেন। সব কিছুই আগের মত আছে। দাঁড় কাকগুলোও। শুধু বাবা নাই। বাড়িতে চাল দাম বাড়ন্ত। চালের টানাটানি দেখা দিয়েছে। রান্না ঘরের চালার উপর একপাল দাঁড় কাক কা কা করছে। বিরক্তিকর ডাক। তবে কর্কশ মনে হয়নি। কাকের কা-কা শুনে মা বললেন-‘আবার কোন অমঙ্গল আসবে রে বাবা?’
বললাম-‘কেন মা, কি হলো?’ জবাবে মা বললো-‘দেখ না কাকগুলো কেমন কা কা করছে?’ বুঝলাম কাকের কা-কা ডাক মার কাছে অমঙ্গলের লক্ষণ। ঢিল মারে, চিৎকার করে কাকগুলো তাড়াবার চেষ্টা করছি। বৃথা হলো আমার চেষ্টা। চলে যায় আবার ফিরে আসে। নতুন করে কা-কা শুরু করে। কাক ডাকবে এতে মানুষের অমঙ্গল হবে কেন? এ দিয়েই আমার কাক ভাবনা শুরু।